Passport

পাসপোর্ট আবেদন বাতিল করার নিয়ম (২০২৪)

আপনি কি অনলাইনে ই-পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করেছেন? অনলাইনে ই-পাসপোর্ট আবেদন পত্রটি জমা দেওয়ার পর দেখলেন ভুল ধরা পড়েছে। এখন কিভাবে সমাধান করবেন? ই-পাসপোর্ট আবেদন বাতিল বা সংশোধন করতে এই পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। এই পোস্টে আমরা দেখবো, কিভাবে আপনি ই-পাসপোর্ট আবেদন বাতিল করার দরখাস্ত লিখতে হয়

পাসপোর্ট আবেদন বাতিল

ই-পাসপোর্ট আবেদনে ভুল হওয়ার কারণে আবেদন বাতিল করতে চান? দেখুন কিভাবে পাসপোর্ট আবেদন বাতিল করার দরখাস্ত লিখবেন। যেমন ধরুন! আপনি ই-পাসপোর্ট ফর্ম ফিলাপের সময় অজ্ঞতাবশত এনআইডিতে উল্লেখিত বর্তমান ঠিকানাটি স্থায়ী ঠিকানার ঘরে উল্লেখ করেছেন। এখন আপনি এই ঠিকানা পরিবর্তন করতে চাচ্ছেন৷ আর জানতে চাচ্ছেন আবেদন বাতিল বা সংশোধন এর কোন উপায় আছে কি?

অনলাইনে ই-পাসপোর্ট আবেদন করার পর দেখতে পেলেন যে, কোন তথ্যে ভুল করেছেন। অথবা দেখা গেলো পাসপোর্ট অফিসে আবেদন জমা দেয়ার পর অফিস থেকে কোন ভুল ধরে আবেদনটি ফেরত দিয়েছে। এ অবস্থায় আপনার করণীয় কি?

  • অনলাইনে আবেদন সম্পন্ন হওয়ার আগে: ই-পাসপোর্ট পোর্টালে আবেদন সম্পন্ন করার আগে আপনি আবেদন ডিলিট করতে পারবেন। কিন্তু! আবেদন একবার Submitted হয়ে গেলে আর ডিলিট করতে পারবেন না
  • ফিঙ্গারপ্রিন্ট জমা দেওয়ার আগে: পাসপোর্ট অফিসে ফিঙ্গারপ্রিন্ট দেওয়ার সময় কম্পিউটার অপারেটরকে ভুলটি সংশোধনের রিকুয়েস্ট করতে পারবেন
  • ফিঙ্গারপ্রিন্ট জমা দেওয়ার পর: ফিঙ্গারপ্রিন্ট জমা দেওয়ার পর আপনাকে হয়তো পাসপোর্ট সংশোধনের আবেদন করতে হবে। যেখানে ভুল তথ্য আর সঠিক তথ্য লিখে একটি আবেদন করবেন। আর নয়তো পাসপোর্ট আবেদন বাতিল করার জন্য দরখাস্ত লেখবেন

এমতাবস্থায়, ফিঙ্গারপ্রিন্ট জমা দেওয়ার পর আপনি যদি আবেদনটি বাতিল করতে চান, তাহলে আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক বরাবর একটি লিখিত আবেদন করতে হবে।

পাসপোর্ট আবেদন একবার সাবমিট করা হলে আবেদনটি আর সংশোধন করা বা একই এনআইডি দিয়ে নতুন করে আবেদন করা যায় না। তবে, পাসপোর্ট অফিসে অনুরোধ করে আবেদনটি সংশোধন করিয়ে নিতে পারবেন।

পাসপোর্ট আবেদন বাতিল করলে কি আবার টাকা দিতে হবে? যারা আবেদনের সময় অনলাইনে পেমেন্ট করেছেন, মানে ই-চালান করেছেন তারা পাসপোর্ট আবেদন বাতিল করলে পাসপোর্ট ফি’র চালানও বাতিল হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে আবেদন বাতিল না করে সংশোধন করিয়ে নিবেন। আর যদি এ-চালানের মাধ্যমে পেমেন্ট করে থাকেন তাহলে আপনার পাসপোর্ট ফি’র চালান বহাল থাকবে।

এক কথায়, পেমেন্ট অপশন অফলাইন থাকলে পেমেন্ট বহাল থাকবে। আর পেমেন্ট অপশন অনলাইন হলে পেমেন্ট বাতিল হয়ে যাবে।

পাসপোর্ট আবেদন বাতিল করার নিয়ম

ই-পাসপোর্ট আবেদন বাতিল করার জন্য, আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক (Additional Director) বরাবর একটি লিখিত আবেদন করতে হবে। এরপর লিখিত আবেদন পত্রের সাথে Application Summery অথবা Print Summary পেইজের কপি যুক্ত করে, সহকারী পরিচালক বরাবর জমা দিন। Additional Director মহোদয় চাইলে সেদিনই আবেদনটি বাতিল করতে পারেন অথবা এক্ষেত্রে আবেদনটি বাতিল হতে সর্বোচ্চ ২৪-৪৮ ঘন্টা সময় লাগতে পারে।

আবেদন বাতিল করতে কোনো টাকা লাগে না। পাসপোর্ট অফিসের আশেপাশ দেখবেন অনেক দালাল ঘুরঘুর করে। আপনার অসহায় মুখ দেখে তারা আপনাকে টার্গেট করবে। কিংবা আপনি তাদের কাছে গেলে তারা আবেদন বাতিল করে দেয়ার জন্য আপনার কাছে টাকা চাইতে পারে। তাই কোনো দালাল ধরবেন না। AD বরাবর একটি দরখাস্ত লিখেই সম্পূর্ণ ফ্রিতে পাসপোর্ট আবেদন বাতিল করাতে পারবেন।

আরও পড়ুন: ই-পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে?

উল্লেখ্য! একটি পাসপোর্ট আবেদনের ২০০ দিন মেয়াদ থাকে। পাসপোর্ট আবেদনটি অফিসে জমা না দিলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ২০০ দিন পর বাতিল হয়ে যাবে। কিন্তু, অযথা দীর্ঘ ৬ মাস অপেক্ষা না করে, আপনি চাইলে একটি লিখিত আবেদন করেই আবেদনটি বাতিল করিয়ে নিতে পারেন।

ই-পাসপোর্ট আবেদন বাতিল করার নিয়ম

ই-পাসপোর্ট আবেদনে ভুল হলে করণীয়,, ই-পাসপোর্ট আবেদন বাতিল করার নিয়ম, ই পাসপোর্ট আবেদনের ভুল সংশোধন।

ই-পাসপোর্ট আবেদন বাতিল করার নিয়ম | E-passport Application Correction

পাসপোর্ট আবেদন বাতিল করার দরখাস্ত

তারিখ: (আবেদনের তারিখ)

বরাবর,
সহকারী পরিচালক,
আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস,
জেলার নাম।

বিষয়: ই-পাসপোর্ট আবেদন বাতিল করণ প্রসঙ্গে

জনাব,
বিনীত নিবেদন এই যে, আমি (আপনার নাম), পিতা: (পিতার নাম), মাতা: (মাতার নাম) গত ১৬/১২/২০২৩ তারিখে ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন করি। যার অনলাইন রেজিস্ট্রেশন আইডি: OID1000001234 এবং Application ID: 4000-100000000। কিন্তু ভুলবশত আমার পাসপোর্ট আবেদনে আমার (নাম/জন্ম তারিখ/মোবাইল নম্বর/জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর/জন্ম নিবন্ধন নম্বর/অন্য কোন তথ্য)ভুল লেখা হয়। এমতাবস্থায়, আমি বর্তমান আবেদনটি বাতিল করে নতুনভাবে আবেদন করতে চাচ্ছি।

অতএব,
মহোদয়ের নিকট বিনীত অনুরোধ এই যে, উপরিউক্ত সমস্যার কথা বিবেচনা করে আমার ই-পাসপোর্ট আবেদনটি বাতিল করতে আপনার একান্ত মর্জি হয়।

বিনীত নিবেদক
____________
(আপনার স্বাক্ষর)
নাম: (আপনার নাম)
ঠিকানা: (আপনার ঠিকানা)।
মোবাইল: 015XX-XXXXXX


তারিখ: (আবেদনের তারিখ)

বরাবর,
পরিচালক/উপ-পরিচালক/সহকারী-পরিচালক/উপ-সহকারী পরিচালক,
বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিস/ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস,
জেলার নাম।

বিষয়: ই-পাসপোর্ট অনলাইন আবেদনপত্র মুছে ফেলার জন্য আবদেন।

জনাব,
বিনীত নিবেদন এই যে, আমি মোহাম্মদ মোখলেসুর রহমান গত ১২/১২/২০২৩ তারিখে অনলাইনে ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন করি, কিন্তু আমার অনলাইন আবেদনপত্রে কিছু ভুল পরিলক্ষিত হয়, যার কারনে উক্ত আবেদনপত্রটি জমা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। আর তাই আমার অনলাইন আবেদনকৃত ই- পাসপোর্ট আবেদনটি যার অনলাইন রেজিস্ট্রেশন নং: সার্ভার থেকে মুছে ফেলা প্রয়োজন।

অতএব, মহোদয়ের নিকট আকুল আবেদন এই যে, উপরোক্ত সমস্যার কথা বিবেচনা করে আমার আবেদনকৃত অনলাইন আবেদনটি মুছে দিয়ে নতুন করে আবেদন করা সুযোগ দিয়ে বাধিত করবেন।

নিবেদক,

(আপনার স্বাক্ষর)
____________
আপনার নাম:
আপনার ঠিকানা:
মোবাইল নাম্বার:


এই ফরম্যাটে আবেদন করে আবেদন পত্রটি নিয়ে আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে উক্ত অফিসের সহকারী পরিচালকের কাছে জমা দিবেন। এরপর বাসায় এসে পাসপোর্ট স্ট্যাটাস চেক করে দেখবেন আবেদন Cancelled হয়েছে কিনা। পাসপোর্ট আবেদন বাতিল করার পর আবার নতুন আবেদন করতে পারবেন।

পাসপোর্ট আবেদন বাতিল করলে কি চালান/পেমেন্ট নষ্ট হবে?

না, পাসপোর্ট আবেদন বাতিল করলেও চালান বাতিল হবে না। কারণ ই পাসপোর্টের এ চালান করা হয় আপনার এনআইডি বা জাতীয় পরিচয়পত্র ও নাম দিয়ে। এই চালানের মেয়াদ ৬ মাস। তবে যারা অনলাইন আবেদনের সময় ekpay এর মাধ্যমে Online Payment করেছেন তাদের পেমেন্ট চালান বাতিল হয়ে যাবে।

Offline Payment মেথডে অর্থাৎ এ চালান বা ব্যাংক থেকে যারা পাসপোর্ট ফি পরিশোধ করেছেন তাদের চিন্তার কোন কারণ নেই। আপনি পুনরায় ই পাসপোর্ট আবেদন করলে একই চালান জমা দিতে পারবেন।

তবে মনে রাখবেন, পূর্বের আবেদনে পাসপোর্টের মেয়াদ, পৃষ্ঠা ও ডেলিভারীর ধরণ যেমন ছিল, পুনরায় একই ধরণের ই পাসপোর্ট আবেদন করবেন। কারণ, আপনি আগের চালানটিই ব্যবহার করতে যাচ্ছেন।


সমাপিকা

ই-পাসপোর্ট আবেদনে ভুল হলে পাসপোর্ট অফিস আপনাকে হয়রানি করার সুযোগ পাবে। তাই পুনারায় আবেদন করতে অভিজ্ঞ কারো সহযোগিতা নিন এবং তথ্যগুলো সঠিকভাবে যাচাই বাছাই করে লিখুন।

আর কখনোই ভুল তথ্য দিয়ে আবেদন জমা দিবেন না। কারণ এর পরিণাম আপনাকেই ভুগতে হবে। পাসপোর্ট এনরোলমেন্ট হওয়ার পর পরবর্তীতে এই ভুল তথ্যের কারণে আপনার পাসপোর্ট প্রিন্ট না হয়ে ফেরত আসতে পারে। পুলিশ ভেরিফিকেশনের সময় পজিটিভ রিপোর্ট না দিতে পারে ইত্যাদি।

এজন্য, তথ্য ভুল থাকলে তা অবশ্যই পাসপোর্ট অফিসে জানাবেন। যদি সম্ভব হয় সেখানে সংশোধন করিয়ে নিবেন। সেটা সম্ভব না হলে, পাসপোর্ট আবেদনটি বাতিল করে পুনরায় নতুনভাবে আবেদন করুন।


আবেদন বাতিল সংক্রান্ত প্রশ্নোত্তর

পাসপোর্ট আবেদন বাতিল করলে কি চালান বাতিল হবে?

Offline Payment করলে ব্যাংক বা এ-চালানের মাধ্যমে পাসপোর্টের ফি পরিশোধ করা হলে তা বাতিল হবে না। তবে, আবেদনের সময় Online Payment (Ekpay) বা ই-চালানের মাধ্যমে ফি পরিশোধ করা হলে তা বাতিল হবে। তাই, আপনি Online Payment করে থাকলে আবেদন বাতিল না করে সংশোধন করুন।

পাসপোর্ট আবেদন বাতিল করলে কি আবার টাকা দিতে হবে?

যারা আবেদনের সময় অনলাইনে পেমেন্ট করেছেন, মানে ই-চালান করেছেন তারা পাসপোর্ট আবেদন বাতিল করলে পাসপোর্ট ফি’র চালানও বাতিল হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে আবেদন বাতিল না করে সংশোধন করিয়ে নিবেন। আর যদি এ-চালানের মাধ্যমে পেমেন্ট করে থাকেন তাহলে আপনার পাসপোর্ট ফি’র চালান বহাল থাকবে।

পাসপোর্ট আবেদনে তথ্যে ভুল হলে কি করণীয়?

ই-পাসপোর্ট আবেদনে কোন তথ্যে ভুল পরিলক্ষিত হলে করণীয় হচ্ছে, লিখিত আবেদন করে পাসপোর্ট অফিসের মাধ্যমে ভুল সংশোধন করা। যদি সংশোধন করা না যায়, আবেদনটি বাতিল করে নতুনভাবে আবার অনলাইনে আবেদন করা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
Index